মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ইজিবাইক (অটোরিক্সা) বন্ধ করে দেয়ার খবরে বরিশাল সিটি মেয়র এর বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে মালিক ও শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপী এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা। পরে থানা পুলিশ বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানাগেছে, ‘আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে যানজট নিরসনে নগরীর প্রান কেন্দ্র সদর রোড, ফজলুল হক এভিনিউ, চক বাজার, গির্জা মহল্লা, ডিসি রোড, ফলপট্টি সহ কয়েকটি সড়কে ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। পর্যায়ক্রমে নগরীতে চলাচলরত অন্যসব অটোরিক্সাও বন্ধের ঘোষনা দিয়েছে তারা।
এমন ঘোষনা দিয়ে বুধবার নগরীতে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে মাইর্কিংও করা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ইজিবাইক মালিক এবং শ্রমিকরা নগরীর কালিবাড়ি রোডে সিটি মেয়র এর বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভকারী মালিক ও শ্রমিকরা বলেন, ‘নগরীতে সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিতে দুই হাজার ৬১০টি ইজিবাইক (হলুদ অটো) চলাচল করছে। এসব অটোরিক্সা কেউ সমিতি ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কিনেছে। যা পরিচালনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করে ইজিবাইক বন্ধ করে দিলে সবাইকে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
অটোরিক্সা মালিক ও শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রশাসন জনদূর্ভোগ লাঘবের কথা বলে ইজিবাইক বন্ধ করে দিলেও এটি একটি অজুহাত মাত্র। তারা কি কারনে ইজিবাইক বন্ধ করে দিয়েছে তা আমাদের জানা রয়েছে। ইজিবাইক বন্ধ করে দিয়ে কোন একটি মহলকে খুশি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এই ইজিবাইক বন্ধ করে দিয়েছে।
মালিক ও শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘ইজিবাইক বন্ধের ঘোষনা হয়েছে মাত্র। বন্ধ হতে এখনো কয়েকদিন সময় রয়েছে। কিন্তু ঘোষনার এক দিনের মধ্যেই একটি পক্ষ নগরীতে ট্রাক ভর্তি সিএনজি নিয়ে এসেছে। মুলত ইজিবাইক বন্ধ না করে ওই সিএনজি চালু করা সম্ভব নয়। তাই মহানগর ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে ইজিবাইক বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইজিবাইক মালিক ও শ্রমিকরা আরো অভিযোগ করেন, ‘নতুন সিএনজি গাড়ি চলাচলের বিষয়ে সিএনজি গাড়ি পরিবেষক এজেন্সির সাথে ট্রাফিক বিভাগ ও বিআরটিএ’র গোপন চুক্তি রয়েছে। প্রতিটি সিএনজি’র বিপরিতে কমিশন পাবেন তারা। সেই কমিশন লাভের আশায় ইজিবাইক মালিক ও শ্রমিকদের পেটে লাথি মারার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
তাই এ বিষয়ে সিটি মেয়রের সহযোগিতা চেয়ে ইজিবাইক মালিক ও শ্রমিকরা বলেন, ‘বন্ধ করতে হলে সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন বিহিন অবৈধ যেসব ইজিবাইক রয়েছে সেগুলো বন্ধ করা হোক। আর অনুমোদিত যে আড়াই হাজার ইজিবাইক রয়েছে সেগুলো চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
যদিও ইজিবাইক বন্ধের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন নগর ট্রাফিক বিভাগের প্রধান খায়রুল আলম। তিনি বলেন, ‘অবৈধ ইজিবাইক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তাছাড়া অবৈধ এই ব্যাটারি চালিত যানের বিরুদ্ধে নগরবাসির নানান অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আপাতত গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ইজিবাইক বন্ধ করা হয়েছে। তবে ইজিবাইকের পরিবর্তে অন্য কোন গাড়ি নগরীতে চালু করা হবে কিনা সে বিষয়টি মেট্রো আরটিসি’র সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
Leave a Reply